সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১১:১৫ অপরাহ্ন

`করোনায় আক্রান্ত শ্রমিকদের দায়িত্ব নেয় না মালিক’

`করোনায় আক্রান্ত শ্রমিকদের দায়িত্ব নেয় না মালিক’

ভিশন বাংলা ডেস্ক: করোনার এই মহামারির সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালানোর নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ পোশাক কারখানার মালিকরা তাদের কোনো নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করছেন না। এমনকি কিছু কিছু কারখানায় স্বাস্থ্য বিধি নামে শ্রমিকদের সঙ্গে প্রহসন করছে।

তারা বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কারখানায় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। অথচ এই সময়ে কারখানায় কাজ করতে এসে কোনো শ্রমিকের যদি তাপমাত্রা বেশি থাকে ওই শ্রমিকদের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেও তাদের কোনো দায়িত্ব কারখানা কর্তৃপক্ষ নিচ্ছে না।

আজ বুধবার করোনায় শ্রমিকদের পোশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) তারা এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিল্স) আয়োজিত ওই ওয়েবিনারে শ্রমিক প্রতিনিধি ছাড়াও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের উন্নয়ন সহযোগী, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) প্রতিনিধি এবং অর্থনীতিবিদরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) মহাসচিব চায়না রহমান বলেন, কোনো শ্রমিক কারখানায় প্রবেশ করার সময় তাপমাত্রা বেশি দেখলে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু বাড়ি গিয়ে ওই শ্রমিক কীভাবে জীবনযাপন করছে, সেই খবর কারখানা কর্তৃপক্ষ রাখে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানার চালু করার জন্য বলা হলেও বাস্তবে তা করছে না। চিন্তা একটাই-কীভাবে মুনাফা বাড়ানো যায়। এ সময় আক্রান্ত হওয়া শ্রমিকের প্রকাশিত সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৪৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। কিন্ত পরীক্ষা করার মতো ব্যবস্থা নেই। ফলে কতজন আক্রান্ত হচ্ছে, তা জানতে পারছি না।

বিলসের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই পরিস্থিতিতে কাজ করানোর ক্ষেত্রে কী কী সুবিধা দিতে হবে, এ বিষয়ে সরকারের একটি অধ্যাদেশ থাকা দরকার ছিল। তা না থাকায় এক্ষেত্রে বৈষম্য হচ্ছে। একশ্রেণির কর্মীরা কিছু সুবিধা পেলেও অন্যরা পাচ্ছে না। শ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়ে কিছু গাইডলাইন হয়েছে, কিন্তু আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকায় তা মানা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, যে দেশে অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুযোগ কমে যায়, সেখানে দুর্যোগ মোকাবেলা কঠিন হয়ে পড়ে।

‘কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শ্রমিক, সম্মুখযোদ্ধা ও সেবা প্রদানকারীদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক ওই ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স এর এ কে এম মাছুম উল আলম। মূল প্রবন্ধে এ ধরণের মহামারী পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের সুরক্ষায় আইনগত বিধান আরো যুযোপযোগী করার উপর গুরুত্ব দেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমিকদের সঠিক সুরক্ষা দিতে হবে। শ্রমিকদের মধ্যে কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্র বিষয়ে আইএলও’র নির্দেশনাবলী সরকার অনুসরণ করতে পারে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যেভাবে বীমার আওতায় আনা হয়েছে, সেভাবে শ্রমিকদেরও বীমা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দেন তারা।

বিলস চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান সিরাজের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব নজরুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের (এসএনএফ) আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন, বিলসের যুগ্ম মহাসচিব ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, আইএলও আরএমজি প্রজেক্ট চীফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার জর্জ ফলার প্রমুখ।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com